• ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে তিন মাসে তিন কূপে মিলল গ্যাস

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
সিলেটে তিন মাসে তিন কূপে মিলল গ্যাস

 শ্যামল প্রান্ত ডেস্ক :: প্রাকৃতিক সম্পদের আধার সিলেটে গত তিন মাসে তিনটি কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। এর ফলে প্রতিদিন সিলেট থেকে আরও ২৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সবশেষ সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশীদপুরের ২ নম্বর কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মিলেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শনিবার তার ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান। নসরুল হামিদ লিখেন- ‘সুখবর বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের জন্য! ‘সিলেটের রশিদপুর-২ নং গ্যাস কূপ অনুসন্ধানে নতুন গ্যাস স্তরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট এবং যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। ‘আশা করছি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে এখান থেকে দৈনিক ৮০ লক্ষ ঘনফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ‘তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে শেখ হাসিনা সরকারের অগ্রাধিকার আগামীতে বাংলাদেশের জন্য আরও বড় সুসংবাদ বয়ে আনবে আশা করি।’ এর আগে গত বছরের ২৬ নভেম্বর দেশের সবচেয়ে পুরনো গ্যাসক্ষেত্র হরিপুরে ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মেলে। খনন কাজ শেষে ওইদিন গ্যাস প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড। গত বছরের জুনে এই কূপ খনন কাজ শুরু হয়। ১৪৯ কোটি টাকায় সিলেট-১০ নম্বর কূপটি খনন করে চীনা কোম্পানি সিনোপেক। কূপটিতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কর্তৃপক্ষ। সিলেট গ্যাসফিল্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, এখানে থেকে দৈনিক ১৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তারা। তিনি জানান, এই কূপে মজুদ গ্যাসের মূল্য ৩৬০০ কোটি টাকা। এলএনজি আমদানি মূল্য হিসেবে তা দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তারও আগে, গত বছরের ২২ নভেম্বর সিলেট কৈলাশটিলায় পরিত্যক্ত ২ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। সেখান থেকে দৈনিক ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৫৫ সালে। এরপর একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হতে থাকে। সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতায় বর্তমানে পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলো হলো- হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশিদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৪টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। জানা যায়, জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে গ্যাসের উৎপাদন ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসজিএফএল-এর আওতাধীন ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ চলছে। সিলেটের ১৪টি কূপের মধ্যে তিনটির খনন কাজ শেষে ২০২২ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০২৩ সালে আরও একটি থেকে উৎপাদন শুরু হয়। ২০২২ সালে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের আওতাধীন সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করা হয়। এসব কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে।