রাত পোয়ালেই আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আযহা। এই ঈদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজের পাশাপাশি পশু কোরবানি করে থাকেন। সামর্থ্যবানরা গরু কোরবানি করলেও নিম্নবত্ত-মধ্যবিত্তের অনেকেরই সেই সামর্থ্য থাকে না। তাই ঈদের দিন বা আগে অনেকেই গরুর মাংস বা মুরগি কিনে থাকেন। কিন্তু ঈদকে ঘিরে দাম বেড়েছে গরুর মাংসসহ প্রায় সব পণ্যের। রবিবার (১৬ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে কোনো না কোনো পণ্যের। এতে স্বস্তি নেই ক্রেতার মনে। তাদের দাবি, নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দেখার নেই কেউ। রমজানের ঈদ পেরিয়ে কোরবানির ঈদ সমাগত। কিন্তু বাজার পরিস্থিতি বদলায়নি বিন্দুমাত্র।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। আদা কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে মানভেদে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন ২০০ থেকে ২২০ আর আমদানি রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মাংসের চাহিদা খুব বেশি না থাকলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। রাজধানীর বাজারে ৭৮০ টাকার নিচে মিলছে না গরুর মাংস। পাশাপাশি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১১শ’ টাকা কেজি।
এদিকে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন বাজারে মসলার একেকরকম দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। মালিবাগে এলাচ ৩ হাজার ৬০০ টাকা, রামপুরায় ৪ হাজার টাকা। আবার লবঙ্গ রামপুরায় ১ হাজার ৭৭০ টাকা, মালিবাগে ২ হাজার টাকা। বাজারে দারচিনির কেজি ৫৬০ থেকে ৬০০ টাকা। এক মাস আগেও যা কেজিতে ৫০ টাকা কম ছিল। আর লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৬০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি। প্রতি কেজি তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়।
এ ছাড়া জয়ত্রি ৪ হাজার, জায়ফল ১ হাজার ৫০০, কাজুবাদাম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ ও কাঠবাদাম ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ঈদকে সামনে রেখে বেড়েছে শসার দামও। এক কেজি শসা ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের কেজি ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, কচুরমুখি ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৭০ ও শজনে ১৬০ টাকা আর প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতাদের। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দেশে মসলার বার্ষিক বাজার এখন ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। তবে এসব পণ্যের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, বিশ্ববাজারে পণ্যের বাড়তি দাম এবং দেশে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি কারণে আগের চয়ে কিছু মসলার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।