সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের ছনুপাড়া গ্রামে জায়গা ক্রয় করে উল্টো হয়রানীর শিকার হচ্ছেন এক প্রবাসীর পরিবার। এতে মদদ দিচ্ছেন স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা। রোববার (২৬ মে) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কুয়েত প্রবাসী তুরন মিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম আলী। তিনি প্রতারক পরিবার ও মদদ দাতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে স্থানীয় এমপি, রাজনীতিবিদ ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
লিখিত বক্তব্যে মমতা বেগম আলী জানান-তার প্রতিবেশী ও আত্মীয় ফারুক মিয়ার কাছ থেকে ২০১৯ সালে বাড়ির ৩ শতক জায়গা তার প্রবাসী স্বামী ক্রয় করেন। পরে ফারুক গ্রিসে চলে যান। ২০২১ সালে গ্রিস থেকে আবার ফারুক তার বাড়ির আরও ৫ শতক জায়গা মা’কে দেয় বিক্রি প্রস্তাব দেন। একই সময়ে ভাসুর ইরান মিয়ার কাছেও ৫ শতক জায়গা বিক্রির প্রস্তাব দেন ফারুক। কিন্তু গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জায়গার দলিল সম্পাদনের দিন ভাসুর ইরান মিয়াকে দলিল করে দিলেও তার স্বামীর দলিল করে দেননি ফারুকের মা। অথচ ফারুক ও তার পরিবার জায়গার বিপরীতে ৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আগেই গ্রহন করেন। জায়গা বিক্রির টাকা পেয়ে গ্রিস থেকে ফ্রান্স চলে যান ফারুক।
মমতা জানান পরবর্তীতে দলিল করে দেওয়া প্রতিশ্রতি দিয়ে রক্ষা করেনি তারা। উল্টো আদালতে হয়রানীর অভিযোগে মামলা করেন ফারুকের মা নাজমা বেগম। ফারুকের পক্ষ হয়ে গত ২১ মে রাত সাড়ে ১২টার দিকে হামলা করেন ফারুকের মা, স্ত্রী ও গ্রামের জাহেদ মিয়াসহ কয়েকজন। এ ঘটনায় তিনি দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা করেছেন। ফারুক শুধু তাদের সাথে সাথে নয়, এলাকার অনেকের সাথে জায়গা বিক্রির নামে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশ চলে যান বলে দাবি করেন মমতা।
এক প্রশ্নের জবাবে মমতা জানান ফারুক বিদেশ থাকলেও তাকে মদদ দিচ্ছেন তার মামা মোল্লারগাও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ ও ছনুপাড়া গ্রামের জাহেদ মিয়াসহ কয়েকজন। গুটি কয়েক ব্যক্তির কারণে তারা শিশু সন্তানদের নিয়ে নিরপত্তাহীনতায় ভোগছেন। জুনেদ রাজনীতির প্রভাব দেখিয়ে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন। ফারুক বিদেশ থেকে টাকার বিনিময়ে দেশে তার লোকজনকে দিয়ে অপকর্ম করাচ্ছেন।
সম্প্রতি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ফারুকদের নানা প্রতারণার প্রেক্ষিতে বৈঠক করে একটি লিখিত সীদ্ধান্ত দিয়েছেন উল্লেখ করে মমতা জানান তাতে ইউপি সদস্য শামসুল ইসলাম লিলন ও মহিলা সদস্য লিপি বেগম সাক্ষর করেছেন। লিখিত ওই সীদ্ধান্তে পঞ্চায়েতের লোকজন ফারুক দেশে থাকাবস্থায় বোনের সিএনজি অটোরিকশা চুরি, সেলিম আহমদ নামের সিএনজি অটোরিকশাও চুরি, ছনুপারা ফঞ্চায়েত কমিটির কাছ থেকে মসজিদের দোকান ভাড়া না পেয়ে দোকান কোটা জ্বালিয়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।
মমতা আশঙ্কা করছেন গ্রামের যারা সত্যের পক্ষে কথা বলছেন তাদের অনেককে ফারুক গংরা মিথ্যা মামলাসহ নানাভাবে হয়রানি করতে পারে। কোনো ব্যাক্তি তাদের কাছ থেকে জায়গা কিনে প্রতারণা ও হয়রানীর শিকার না হন সেজন্য তিনি সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মমতা বেগম আলীর স্কুল পড়ুয়া ছেলে সাজ্জাদ হোসেন, ইখতেখার হোসেন, ভাসুরের স্ত্রী ইয়াসমিন সুলতানা ও তার ছেলে মুছাদ আহমদসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি